সখীপুরে টার্কি পালনে সফল আলাউদ্দিন

শখের বসে টার্কি পালন করে এখন সফলতার মুখ দেখছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন। সংসারের কাজের ফাকে টার্কি খামার গড়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। আলাউদ্দিনের টার্কি খামারের সফলতা দেখতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই লোকজন ছুটে আসছেন।

উপজেলার বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক শামসুল হকের ছেলে আলাউদ্দিন বাড়িতে চার শতাধিক আমেরিকান টার্কি মুরগী নিয়ে গড়ে তুলেছেন টার্কি খামার। টার্কি মুরগী, ডিম ও বাচ্চা উৎপাদন করে বিক্রি করে মাসে এক লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। এ ছাড়াও বসতবাড়িতে তিতি মুরগী, ফ্রান্সের মুরগী, দেশি ও বিদেশী জাতের কবুতরের খামারও গড়ে তুলেছেন। এসব কাজের তাকে সহযোগিতা করছেন তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার।

সরেজমিনে আলাউদ্দিনের টার্কি খামারে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, আলাউদ্দিন ২০১৫ সালে বাড়ির পাশে ২০ শতক জায়গার ওপর ‘আলাউদ্দিন টার্কি ফার্ম’ নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। প্রথমে তিনি ঢাকা থেকে ২০০ বাচ্চা এনে খামার শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর খামারে ৪’শ টার্কি মুরগী রয়েছে।

তিনি জানান, প্রতিটি টার্কি মুরগী একটানা ২২টি পর্যন্ত ডিম দেয়। টার্কি মুরগী দানাদার খাদ্য ছাড়াও কলমি শাক, বাঁধাকপি ও সবজি জাতীয় খাবার খায়। ৪ মাস পর থেকে খাওয়ার উপযোগী হয় এটি। একটি টার্কি মুরগীর ওজন ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি টার্কি মুরগীর মাংস বিক্রি হয় ৬’শ থেকে ৭’শ টাকায়। সুস্বাদু এই মুরগীর রোগ বালাই তেমন হয়না। এর মাংসে অধিক পরিমাণে প্রোটিন ও কম পরিমাণে চর্বি রয়েছে। অনেকটা খাসির মাংসের মতই স্বাদ হওয়ায় এর মাংসও বাজারে একই দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

আলাউদ্দিন আরো বলেন, প্রথমে টেলিভিশনে বিভিন্ন সময় টার্কি মুরগীর ওপর প্রতিবেদন দেখে আমার টার্কি পালনের প্রতি উৎসাহ বেড়ে যায়। ২০১৫ সালের শেষের দিকে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে ঢাকা থেকে প্রথমে ২’শ টার্কির বাচ্চা এনে খামার গড়ে তুলি। সারা দেশে বাণিজ্যিকভাবে এই খামারের পরিকল্পনা ছড়িয়ে দিতে তিনি নিজেও এখন বেকারদের টার্কি পালনে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ও উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি মনে করেন, বেকারত্ব দূর করতে টার্কি পালন খুবই ভালো পরিকল্পনা। তিনি তাঁর ফার্মের পরিধি ও বাচ্চা ফুটানোর ব্যবস্থা করতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারবেন বলে জানান।

এ প্রসঙ্গে সখীপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এসএম উকিল উদ্দিন জানান, বাংলাদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশে পশু-পাখি পালন করা অন্যান্য দেশের তুলনায় ভলো। আলাউদ্দিনের দেখাদেখি সখীপুরে এখন অনেকেই টার্কি মুরগী পালনে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। রোগবালাই ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি পালন করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। টার্কি একটি বড় আকারের গৃহপালিত পাখি। টার্কি প্রাণী একটি সহনশীল জাত, যেকোনো পরিবেশ দ্রুত এরা নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।